প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী জুড়ে মানবিক মূল্যবোধের চরম সংকটময় মূহুর্তে বাংলা কথা-সাহিত্যে যে কয়েকজন লেখকের হাতে সাহিত্যজগতে নতুন এক বৈ...
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী জুড়ে মানবিক মূল্যবোধের চরম সংকটময় মূহুর্তে বাংলা কথা-সাহিত্যে যে কয়েকজন লেখকের হাতে সাহিত্যজগতে নতুন এক বৈপ্লবিক ধারা সূচিত হয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম । তাঁর রচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল মধ্যবিত্ত সমাজের কৃত্রিমতা, শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম, নিয়তিবাদ ইত্যাদি। ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ও মার্কসীয় শ্রেণীসংগ্রাম তত্ত্ব দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তার রচনায় ফুটে উঠেছে।
পরিচিতিঃ
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মে (১৩১৫ বঙ্গাব্দের ৬ জ্যৈষ্ঠ) বিহারের সাঁওতাল পরগনা,বর্তমান ঝাড়খন্ড রাজ্যের দুমকা শহরে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পৈতৃক বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরের বর্তমান লৌহজং এ ৷ জন্মপত্রিকায় তার নাম রাখা হয়েছিল অধরচন্দ্র। তার পিতার দেওয়া নাম ছিল প্রবোধকুমার আর ডাকনাম মানিক। তার পিতার নাম হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতা নীরদাসুন্দরী দেবী। চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন অষ্টম। পিতার বদলির চাকরির সূত্রে মানিকের শৈশব-কৈশোর ও ছাত্রজীবন অতিবাহিত হয়েছে বাংলা - বিহার - ওড়িষার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে । ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে লেখক মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন যা পরবর্তী কালে জটিল অবস্থায় গমন করে। জীবনের শেষদিকে তীব্র আর্থিক কষ্টে ভুগেছেন তিনি। দীর্ঘদিন রোগভোগের পর ৩রা ডিসেম্বর ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যু ঘটে।
পিতৃদত্ত নাম ➡ প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডাকনাম ➡ কালো মানিক, জন্মপত্রিকায় নাম ছিল অধরচন্দ্র। রচনাসমূহঃ
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় মোট ৪০টি উপন্যাস এবং প্রায় ৩০০টি ছোটোগল্প লিখেছেন ।
প্রথম রচনাঃ
⇛ লেখক রূপে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবির্ভাব মূলত ➡ ‘বঙ্গশ্রী’ পত্রিকায়।
⇛ তাঁর প্রথম রচনা ➡ “অতসীমামী”, যা ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘বিচিত্রা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
⇛ তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস ➡ “দিবারাত্রির কাব্য”। উপ্যনাসটি ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে রচিত হয় কিন্তু প্রকাশিত হয় ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে।
⇛ তাঁর প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ➡ “জননী” (১৯৩৫)।
উপন্যাসসমূহ :
১. ‘জননী’ ১৯৩৫
২. ‘দিবারাত্রির কাব্য’ ১৯৩৫
৩. ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ ১৯৩৬
৪. ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ১৯৩৬
৫. ‘জীবনের জটিলতা’ ➡ ১৯৩৬
৬. ‘অমৃতস্য পুত্রাঃ’ ➡ ১৯৩৮
৭. ‘সহরতলী’➡ (১ম খন্ড - ১৯৪০, দ্বিতীয় খন্ড - ১৯৪১)
৮. ‘প্রতিবিম্ব’➡ ১৯৪৩
২. ‘দিবারাত্রির কাব্য’ ১৯৩৫
৩. ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ ১৯৩৬
৪. ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ১৯৩৬
৫. ‘জীবনের জটিলতা’ ➡ ১৯৩৬
৬. ‘অমৃতস্য পুত্রাঃ’ ➡ ১৯৩৮
৭. ‘সহরতলী’➡ (১ম খন্ড - ১৯৪০, দ্বিতীয় খন্ড - ১৯৪১)
৮. ‘প্রতিবিম্ব’➡ ১৯৪৩
৯. ‘প্রতিবিম্ব’ ➡ ১৯৪৩
১০. ‘সহরবাসের ইতিকথা’ ➡ ১৯৪৬
১১. ‘চিন্তামণি’ ➡ ১৯৪৬
১২. ‘চিহ্ন’ ➡ ১৯৪৭
১২. ‘চিহ্ন’ ➡ ১৯৪৭
১৩. ‘আদায়ের ইতিহাস’ ➡ ১৯৪৭
১৪.‘চতুষ্কোণ’ ➡ ১৯৪৮
১৫. ‘জীয়ন্ত’ ➡ ১৯৫০
১৬. ‘পেশা’ ➡ ১৯৫১
১৭. ‘স্বাধীনতার স্বাদ’ ➡ ১৯৫১
১৮. ‘সোনার চেয়ে দামী’ ➡ (১ম খন্ড -১৯৫১, ২য় খন্ড -১৯৫২)
১৪.‘চতুষ্কোণ’ ➡ ১৯৪৮
১৫. ‘জীয়ন্ত’ ➡ ১৯৫০
১৬. ‘পেশা’ ➡ ১৯৫১
১৭. ‘স্বাধীনতার স্বাদ’ ➡ ১৯৫১
১৮. ‘সোনার চেয়ে দামী’ ➡ (১ম খন্ড -১৯৫১, ২য় খন্ড -১৯৫২)
১৯. ‘ছন্দ পতন’ ➡ ১৯৫১
২০. ‘ইতিকথার পরের কথা’➡ ১৯৫২
২০. ‘ইতিকথার পরের কথা’➡ ১৯৫২
২১. ‘পাশাপাশি’ ➡ ১৯৫২
২২. ‘সর্বজননীন’ - ১৯৫২
২৩. ‘আরোগ্য’ ➡ ১৯৫৩
২৩. ‘আরোগ্য’ ➡ ১৯৫৩
২৪. ‘তেইশ বছর আগে পরে’ ➡ ১৯৫৩
২৫. ‘নাগপাশ’ ➡ ১৯৫৩
২৬. ‘চালচলন’ ➡ ১৯৫৩
২৭. ‘শুভাশুভ’ ➡ ১৯৫৪
২৮. ‘হরফ’ ➡ ১৯৫৪
২৯. ‘পরাধীন প্রেম’➡ ১৯৫৫
৩০. ‘হলুদ নদী সবুজ বন‘➡ ১৯৫৬
৩০. ‘হলুদ নদী সবুজ বন‘➡ ১৯৫৬
৩১. ‘প্রাণেশ্বর উপাখ্যান’ - ১৯৫৬
৩২. ‘মাটি ঘেঁষা মানুষ’ - ➡ ১৯৫৭
৩৩. ‘চাষীর মেয়ে ও কুলির বৌ’ ➡ ১৯৬০
৩৪. ‘শান্তিলতা’ ➡ ১৯৬০
৩৬. ‘মাঝির ছেলে’ ➡ ১৯৫৯ ইত্যাদি ।
৩৬. ‘মাঝির ছেলে’ ➡ ১৯৫৯ ইত্যাদি ।
গল্পগ্রন্থ :
১. ‘অতসীমামী ও অন্যান্য গল্প’ ➡ ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দ ।
২. ‘প্রাগৈতিহাসিক’➡ ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দ ।
৩. ‘মিহি ও মোটা কাহিনী’ ➡ ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দ ।
৪. ‘সরীসৃপ’➡ ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ ।
৫. ‘বৌ’ ➡ ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ ।
৬. ‘সমুদ্রের স্বাদ’ ➡ ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দ ।
৭. ‘ভেজাল’ ➡ ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দ ।
৮. ‘হলুদ পোড়া’ ➡ ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দ ।
৭. ‘ভেজাল’ ➡ ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দ ।
৮. ‘হলুদ পোড়া’ ➡ ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দ ।
৯. ‘আজকাল পরশুর গল্প’ ➡ ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ ।
১০. ‘পিস্থিতি’ ➡ ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ ।
১১. ছোটোবড়ো’ ➡ ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ ।
১২. ‘মাটির মাশুল’ ➡ ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৩. ‘ছোট বকুলপুরের যাত্রী’ ➡ ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দ ।
১২. ‘মাটির মাশুল’ ➡ ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৩. ‘ছোট বকুলপুরের যাত্রী’ ➡ ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৪. ‘মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠগল্প’ - ➡ ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৫. ‘ফেরিওয়ালা’ ➡ ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৬. ‘লাজুকলতা’ ➡ ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৭. ‘মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বনির্বাচিত গল্প’ - ➡ ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৮. ‘গল্প সংগ্রহ’ ➡ ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ ।
১৯. ‘ছোটোদের শ্রেষ্ঠগল্প’ ➡ ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দ ।
২০. ‘উত্তরকালের গল্প সংগ্রহ’ ➡ ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দ ।
২১. ‘কিশোর বিচিত্রা’ ➡ ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দ ।
অন্যান্যঃ
অন্যান্যঃ
প্রবন্ধ সংকলন : ‘লেখকের কথা’ ➡ ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দ ।
নাটক : ‘ভিটে মাটি’ ➡ ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ ।
রাজনৈতিক গল্প : ‘হারাণের নাতজামাই’ ও ‘ছোটো বকুলপুরের যাত্রী’ ।
আলোচনাঃ
(a)‘জননী’:
⇛ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত প্রথম উপন্যাস ➡ “জননী” (১৯৩৫)।
⇛ এটি লেখকের প্রথম উপন্যাস যা কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি, গ্রন্থাকারেই প্রথম মুদ্রিত হয়।
⇛ শ্যামা নামে এক গৃহবধূর জননী সত্ত্বার বহুবিধ আত্মপ্রকাশ এই উপন্যাসের উপজীব্য।
⇛ ‘জননী’ মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস।
⇛ উপন্যাসের মূল চরিত্র শ্যামা, শীতল, বিধান, বকুল, রাখাল, মন্দা ।
(b) ‘দিবারাত্রির কাব্য’:
⇛ দিবারাত্রির কাব্য পত্রিকায় মুদ্রণের দিক দিয়ে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস।
⇛ বঙ্গশ্রী পত্রিকায় এটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
⇛ টি তাঁর প্রকাশিত দ্বিতীয় উপন্যাস।
⇛ মানিক নিজেই স্বীকারোক্তি দেন যে- “ দিবারাত্রি কাব্য আমার একুশ বছর বয়সের রচনা। শুধু প্রেমকে ভিত্তি করে বই লেখার সাহস ওই বয়সেই থাকে। কয়েক বছর তাকে তোলা ছিল। অনেক পরিবর্তন করে গত বছর (১৩৪১বঙ্গাব্দ) বঙ্গশ্রীতে প্রকাশ করি”।
⇛ “ বঙ্গশ্রী” পত্রিকায় উপন্যাসটি শুরু হয় “একটি দিন” নামক একটি বড় গল্পের আকারে। পরবর্তী দুই কিস্তি “একটি সন্ধ্যা” তার পরের দুই কিস্তি “রাত্রি” এবং শেষ পর্যন্ত শেষ চার কিস্তি “দিবারাত্রির কাব্য” এইভাবে গল্পটি পূর্বানুক্রমিক এগোয় এবং সমাপ্ত হয়।”
⇛ দিবারাত্রি কাব্য তিন ভাগে বিভক্ত এবং প্রতিটি ভাগেই পৃথক পৃথক শিরোনামযুক্ত।
(ক) প্রথম ভাগ “দিনের কবিতা” - দিনের কবিতায় হেরেম্ব-সুপ্রিয়ার প্রেম কাহিনী রয়েছে ।
(খ) দ্বিতীয় ভাগ “রাতের কবিতা” - এখানে অনাথ ও মালতীর প্রেম কাহিনী রয়েছে ।
(গ) তৃতীয় ভাগ “ দিবারাত্রি কাব্য” - এখানে দিন ও রাতের কবিতা এক সূত্রে গাঁথা।
(c) ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’:
⇛ পুতুলনাচের ইতিকথা বাঙালি সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা তৃতীয় উপন্যাস ।
⇛ এটি চতুর্থ মুদ্রিত গ্রন্থ।
⇛ উপন্যাসটি ভারতবর্ষ পত্রিকায় বাংলা ১৩৪১ সালের পৌষ থেকে ১৩৪২ সালের অগ্রহায়ণ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
⇛ ১৯৩৬ সালে এটি বই আকারে প্রকাশিত হয়।
⇛ উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র গ্রামের ডাক্তার শশী।
⇛ গ্রামের পটভূমিতে শশী, কুসুম-সহ অন্যান্য চরিত্রগুলোর মাঝে বিদ্যমান জটিল সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে গড়ে উঠেছে এর কাহিনী ও প্রেক্ষাপট।
(d) ‘পদ্মানদীর মাঝি’:
⇛ “পদ্মা নদীর মাঝি” - গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে এটি ‘পূর্বাশা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
⇛ মা নীরদাসুন্দরী দেবীর আদি নিবাস গাওদিয়া গ্রাম, এই গ্রামের পটভূমিতেই উপন্যাসটি রচিত।
⇛ ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে সুইডেন প্রকাশক সংস্থা ‘Foklet I Bilj’ থেকে উপন্যাসটি সুইডিশ ভাষায় অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়।
⇛ উপন্যাসটিতে মোট ৭ টি পরিচ্ছেদ বর্তমান। ১ম পরিচ্ছেদটি সবচেয়ে বড়।
⇛ চরিত্র - কুবের, স্ত্রী মারা, শ্যালিকা কপিলা, হোসেন মিঞা।
(e) ‘চিহ্ণ’:
⇛ “চিহ্ন” মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পনেরোতম উপন্যাস ও সাতাশ সংখ্যক মুদ্রিত গ্রন্থ।
⇛ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়। মাঘ ১৩৫৩, জানুয়ারি ১৯৪৭-এ ।
⇛ উপন্যাসে প্রকাশকালের উল্লেখ নেই, “লেখকের কথা’ শীর্ষক ভূমিকা থেকে সময়কাল নির্ণয় করা যায।
⇛ গ্রন্থাকারে প্রকাশের পূর্বে চিহ্ন দৈনিক বসুমতী’ পত্রিকার ১৩৫৩ নববর্ষ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।
⇛ ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর “চিহ্ন” উপন্যাসটি চেক ভাষায় অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়।
তথ্যাবলীঃ
⇛ অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্ত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে - “কল্লোলের কুলবর্ধন” বলেছেন।
⇛ বুদ্ধদেব বসুর মতে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় - “Belated Kollolian”।

No comments