Page Nav

HIDE

Classic Header

{fbt_classic_header}

NEW :

latest

ভারতচন্দ্র রায় ও ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যঃ

মধ্যযুগের শেষ পর্বের কবি ভারতচন্দ্র রায় । তিনি যুগব্যাপী দেবতার ভণ্ডামী ও স্বেচ্ছাচারিতা ব্যঙ্গের কশাঘাতে নিদারুণভাবে বিপর্যস্ত করে আপন মনের...


মধ্যযুগের শেষ পর্বের কবি ভারতচন্দ্র রায় । তিনি যুগব্যাপী দেবতার ভণ্ডামী ও স্বেচ্ছাচারিতা ব্যঙ্গের কশাঘাতে নিদারুণভাবে বিপর্যস্ত করে আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে বাংলা সাহিত্যের যুগসন্ধিক্ষনে আবির্ভূত হন । তুর্কি আক্রমনের ভয়ে ভীত বাঙালীর কাছে মঙ্গলকাব্যের গান ছিল তাদের কাছে আদরের সামগ্রি । কিন্তু তিনি সেই পথে না হেঁটে এই ধারায় নতুন করে কাহিনী বিন্যাস করে যুগের রুচি ও চাহিদাকে মর্যাদা দিয়ে নিজ প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে রচনা করলেন মঙ্গলকাব্য ধারায় স্বতন্ত্র মঙ্গলকাব্য -- ‘অন্নদামঙ্গল’ ।

    ব্যক্তি জীবনঃ     
            কবি ঈশ্বরগুপ্ত ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের জীবন বৃত্তান্ত ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায় প্রকাশ করেন । পত্রিকা থেকে জানা যায় - হাওড়া - হুগলী জেলার অন্তর্গত ভুরশুট পরগনার পেঁড়ো গ্রামে ১৭০৫ - ১১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে কবি জন্মগ্রহন করেন । ভারতচন্দ্রের পিতার নাম - নরেন্দ্রনারায়ণ রায়, মাতা - ভবানী দেবী । ভারতচন্দ্রের স্ত্রীর নাম - রাধা । তিনি কেশরকুনি বংশের মেয়ে ছিলেন । ভারতচন্দ্রের কৌলিক উপাধি ছিল মুখোপাধ্যায় । জমিদারী সুত্রে ‘রায়’ উপাধি । রামচন্দ্র মুন্সি’র কাছ থেকে ফার্সী ভাষা শেখেন । বর্ধমান রাজ কীর্তিচন্দ্রের দেওয়ান রাজবল্লভের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ভারতচন্দ্র বিনা দোষে কারারুদ্ধ হন । সেখান থেকে পালিয়ে কিছুদিন সন্ন্যাসজীবন যাপন করেন। আত্মীয়স্বজনের চেষ্টায় সংসারী হন এবং পরে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি নিযুক্ত হন। রাজার অনুরোধে ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য রচনা করে 'রায়গুণাকর' উপাধি লাভ করেন।১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে ৪৮ বছর বয়সে বহুমুত্র রোগে ভারতচন্দ্র রায় মারা যান ।

    কাব্য পরিচয়ঃ     
      ভারতচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হল ‘অন্নদামঙ্গল’ । তিন খন্ডে আটটি পালায় বিভক্ত কাব্যটি । কাব্যের খন্ড তিনটি যথাক্রমেঃ
ক) ‘অন্নদামঙ্গল’--- ‘শিবায়ন’
খ) ‘কালিকামঙ্গল’ --- ‘বিদ্যাসুন্দর’
গ) ‘অন্নপূর্ণামঙ্গল’ --- ‘মানসিংহ’ ।



   কাব্যের চরিত্র পরিচয়ঃ     
(a) হরিহোড় --- কুবেরের অনুচর ।
(b) ভবানন্দ মজুমদার --- কুবেরের পুত্র নলকুবের ।
(c) বিদ্যা --- জগানন্দ ।
(d) সুন্দর --- জগাবতী ।


   কাব্যের রচনাকালঃ    
        
অন্নদামঙ্গল কাব্যের তৃতীয় খন্ডে ভারতচন্দ্র কাব্য রচনার সন উল্লেখ করেছেনঃ
‘‘বেদ লয়ে ঋষি রসে ব্রহ্ম নিরুপিলা ।
সেই শকে এই গীত ভারত রচিলা ।।”
--- এই শ্লোকটি বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায়ঃ
বেদ = ৪, ঋষি = ৭, রস = ৬, ব্রহ্ম = ১, শকে = শকাব্দ ।

‘অঙ্কস্য বামা গতি’ অনুসারে ১৬৭৪ শকে । অর্থাৎ (১৬৭৪+৭৮) = ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে এই কাব্য রচিত হয় ।


    অন্যান্য কাব্যঃ    
        অন্নদামঙ্গল কাব্য’ ছাড়াও ভারতচন্দ্র রচনা করেন ‘সত্যপীরের পাঁচালী’, ‘নাগাষ্টক’, ‘গঙ্গাষ্টক’, ‘রসমঞ্জুরী’, ‘বিবিধ কবিতাবলী’, ‘চন্ডীনাটক’, ‘পত্রম’।

    ভারতচন্দ্রের সমাজ ও যুগসচেতনতাঃ     
            ভারতচন্দ্র ছিলেন সমাজ ও যুগসচেতনার কবি। যুগধর্মের জন্যই ভারতচন্দ্রের সময়ে জনসাধারণ দেবতার মাহাত্ম্য ও কৃপার প্রতি আস্থাভাজন ছিলেন না। কবি পুরাতনকে নামমাত্র গ্রহণ করে নতুনত্বের উদ্‌বোধন ঘটিয়েছেন। অন্নদামঙ্গল কাব্য পুরাতন যুগের শেষ ও নতুন যুগের শুরু।


    কবি ভারতচন্দ্রের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্যঃ     
        কবি ভারতচন্দ্র তাঁর কাল থেকে অনেকটা এগিয়ে আছেন। আধুনিকতার বাণী—যুক্তি, বুদ্ধি ও মানবতা হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো তাঁর কাব্যে দীপ্তি বিকীর্ণ করেছে। রাজসভার শব্দ ও ছন্দের ঘটা, অনুপ্রাস ও ব্যজস্তুতির সমারোহ এবং ব্যঙ্গ বিদ্রূপের শৈল্পিক রসসৃষ্টিতে তিনি বিদগ্ধ নাগরিক রুচির পরিতৃপ্তি সাধন করেছেন। তিনি যুগসমাপ্তির জয় দুন্দুভি বাজিয়ে যুগাতিক্রান্তী ভিন্নতর আদর্শের বার্তা ঘোষণা করেছেন। এখানেই কবি হিসেবে ভারতচন্দ্রের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য।

    মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে ভারতচন্দ্রের স্মরণীয়তাঃ     
        ভারতচন্দ্র তাঁর মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও সরস রঙ্গব্যঙ্গ রচনারীতির জন্য মধ্যযুগের বাংলা সাহিতে নিঃসন্দেহে 'আলোকস্তম্ভের ন্যায় বিরাজমান। জীবনের অসংগত হাস্যমুখর ও কৌতুকপ্রবণ দিকটি তিনি আশ্চর্য দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রত্যক্ষ জীবনের ভূমিকায় দেবদেবীকে তিনি মাটির মানুষ করে তুলেছেন।

   ‘ ভারতচন্দ্রের কাব্যভাষা শিল্পের তাজমহলঃ    
        শব্দচয়ন ও বয়নে, ছন্দনির্মাণে, চিত্র ও সঙ্গীত রসসৃজনে, অলংকরণের পারিপাট্যে অনির্বচনীয়তায়, শব্দচাতুর্যে ভারতচন্দ্রের কাব্য ভাষা শিল্পের তাজমহল। তিনি ভাব গভীরতায় অবগাহন করেননি, তাঁর জগৎ প্রশান্তি, সৌন্দর্য ভক্তি বিহ্বলতার জন্য নয়। পূর্ববর্তী ধর্মের প্রতি তার কটাক্ষে কামভাবনার চিত্রায়নে ভারতচন্দ্রের কাব্য অনন্যতুল্য ভাষাশিল্পের অধিকারী।
                        ‘ভারতচন্দ্রের কাব্য ভাষার তাজমহল’ বলেছেন দীনেশচন্দ্র সেন ।

     “রাজসভার কবি রায়গুণাকরের অন্নদামঙ্গল গান রাজকণ্ঠের মণিমালার মতো—যেমন তাহার উজ্জ্বলতা তেমনি তাহার কারুকার্য।” – রবীন্দ্রনাথের এই মন্তব্যটির যথার্থতাঃ     

        সার্থক শিল্পপ্রতিভার গুণে ভারতচন্দ্রের সৃষ্ট মনুষ্য চরিত্রগুলি প্রত্যক্ষও খুবই সজীব। ছন্দ, অলংকার ও প্রবচনবহুল বাগভঙ্গির সুষম প্রয়োগে কবি মৌলিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন। অনুপ্রাস, যমক, উপমা, শ্লেষ, রূপক, ব্যজস্তুতি ও উৎপ্রেক্ষা প্রভৃতি অলংকারের সার্থক প্রয়োগে, ভুজঙ্গ প্রয়াত, তোটক ও তোণক প্রভৃতি ছন্দের ব্যবহারনৈপুণ্যে এবং শ্লেষকৌতুকপূর্ণ তির্যক দৃষ্টিভঙ্গির পরিস্ফুটনে, বর্ণনার পারিপাট্যে, বৈচিত্র্যে ও মাধুর্যে অন্নদামঙ্গল অনন্য শিল্পমণ্ডিত সৃষ্টি। তাই রবীন্দ্র মন্তব্য যথার্থ।

   ভারতচন্দ্র রাজসভার কবিঃ    
        ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যে নাগরিকতা ধর্মী অথচ অবক্ষায়িত যুগধর্মের লক্ষণসমূহ যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। আলোচ্য কাব্যটি রাজার ও রাজসভার পরিষদবর্গের মনোমত রূপলাভ করে প্রকৃত রাজসভার কার্য হয়ে উঠলো। বিষয়বস্তু ব্যাতীত কাব্য প্রকরণে, অলংকার-ভাষা-ছন্দে-শব্দে নাগরিকতাধর্মী রাজসভার যোগ্য মানসিকতা প্রকাশ পেয়েছে বলে ভারতচন্দ্র রাজসভার কবি।


    ভারতচন্দ্রের কাব্যে কৌতুকপ্রিয়তার পরিচয়ঃ     
        ভারতচন্দ্রের কাব্যে যুগব্যাপী দেবতার ভণ্ডামী ও স্বেচ্ছাচারিতা ব্যঙ্গের কশাঘাতে নিদারুণভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। মধ্যযুগের পৌরাণিক ও লৌকিক দেবতার অন্তঃসারশূন্যতা, সামাজিক জড়ত্ব ও মিথ্যার প্রতি ভারতচন্দ্রের প্রাণের বক্রোক্তি অন্নদামঙ্গলে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। শিবের প্রতি ছেলেদের ব্যঙ্গবিদ্রূপ ও কৌতুক পরিহাসের অর্থ হল দেবতার প্রতি অবিশ্বাস এবং ভণ্ডামির মুখোশ খুলে দেওয়া।

    অন্নদামঙ্গলে ভারতচন্দ্রের প্রযুক্ত প্রবচনঃ     
(i) 'নগর পুড়িলে দেবালয় কী এড়ায়’
(ii) 'মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন’
(iii)‘বড়োর পীরিতি বালির বাঁধ’
(iv)‘নীচ যদি উচ্চভাষে সুবুদ্ধি উড়ায়ে হাসে',
(iv) খুন হয়েছিনু বাছা চুন চেয়ে চেয়ে’
(v)‘যার কর্ম তার সাজে অন্য লোকের লাঠি বাজে',
(vi) 'ভাবিতে উচিত ছিল প্রতিজ্ঞা যখন,
(vii) ‘সে কহে বিস্তর মিছা, যে কহে বিস্তর’
(viii) ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’ প্রভৃতি ।


    মধ্যযুগের অবক্ষয়-পর্বের শ্রেষ্ঠ কবি ভারতচন্দ্রঃ     
        মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অবক্ষয়-পর্বের শ্রেষ্ঠ কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র। তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘অন্নদামঙ্গল’ । ভারতচন্দ্রের কাব্যে যুগরুচির তৃপ্তি সাধনের চেষ্টা প্রকট। চতুর্দিকের সামাজিক ভাঙন কবিকে ধর্মমনস্কা থাকতে দেয়নি। তাই তাঁর কাব্যের দেবদেবী দৈব-পরিমণ্ডল ছেড়ে মর্ত্য পৃথিবীতে নেমে এসেছেন। তাঁরা মানবিক রসে জারিত। পূর্বতন ধর্মপ্রাণতার প্রতি কটাক্ষ আছে, শৃঙ্গার রসের বর্ণনায় কবি অত্যুৎসাহী। যুগের রুচিদুষ্টতার শিল্পমার্জিত রূপ পাওয়া যায় তাঁর কাব্যে।

     ভারতচন্দ্র যুগসন্ধির কবিঃ    
        ভারতচন্দ্র মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের মাঝখানে আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে তাঁর কাব্যে গতযুগের বিলীয়মানতা এবং আগামী যুগের উন্মেষ মুখরতা প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর কাব্যে আধুনিকতার লক্ষন মানবিকতাবাদ, বুদ্ধিপ্রাকর্ষ ইত্যাদি প্রবল। ধর্ম সম্বন্ধেও তার ব্যাঙ্গোক্তি আছে। তিনি যুগকে সৃষ্টি করতে বা অতিক্রম করতে পারেনি বলে তিনি যুগেরই সৃষ্টি, যুগসন্ধির কবি।

     ভারতচন্দ্র তাঁর কাব্যকে নূতনমঙ্গল বলার কারণঃ     
        ভারতচন্দ্রের কবি মানসের বৈচিত্রমুখী নানাচারিতা তার কাব্যকে বহু নতুন গুণে ভূষিত করেছে। তাঁর কাব্যে মঙ্গলকাব্যের বিষয়বস্তু ও প্রকরণ বৈশিষ্ট্য গৃহীত হলেও তিনি মূলভক্তিভাবনায়, কাহিনীবিন্যাসে, দেবদেবীর দেবীমহিমা চরিত্ররূপ পরিকল্পনায় গুণগত স্বাতন্ত্র্যে ভূষিত হয়েছে। তাঁর কাব্যে দৈবনির্ভর অনুপস্থিত। গোষ্ঠী ভাবাপন্ন মঙ্গলকবিদের ধর্মবোধ থেকে ভারতচন্দ্রের ধর্মবোধ দূরবর্তী। কাব্যটি আধুনিক মননের দীপ্তিতে পূর্ণ বলে যথার্থভাবেই ভারতচন্দ্র তাঁর কাব্যে ‘নতুন মঙ্গল’ বলে অভিহিত করেছেন।

    ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল সম্পর্কে কিছু উক্তিঃ      
(i)'‘মুকুন্দরামের চন্ডীমঙ্গলের কাহিনীর অনুকরণেই অন্নদামঙ্গলের প্রথম খন্ড রচিত হইয়াছে’ - আশুতোষ ভট্টাচার্য একথা বলেছেন ।
(ii) ভারতচন্দ্রকে ‘ছন্দের রাজা’ বলেছেন ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ।
(iii)‘ভারতচন্দ্রের কাব্য ভাষার তাজমহল’ বলেছেন দীনেশচন্দ্র সেন ।
(iv)ভারতচন্দ্রকে ‘সাহিত্যের চরম কারুশিল্প’ বলেছেন প্রমথ চৌধুরি ।
(iv) মধুসূদন দত্ত ভারতচন্দ্রকে ‘ম্যান অফ দা এলিগেন্ট জিনিয়াস’ বলেছেন ।
(v) ভারতচন্দ্রের ‘রসমঞ্জুরি’ কাব্যকে বঙ্কিমচন্দ্র বাংলা সাহিত্যের প্রথম গীতিকবিতা বলেছেন ।
(vi) `Bengali Literature’ প্রবন্ধে বঙ্কিমচন্দ্র ভারতচন্দ্র রায়কে ‘Father of modern Bengali’ বলেছেন।
(vii)`রাজসভার কবি রায়গুণাকরের অন্নদামঙ্গল গান রাজকন্ঠ্যের মণিমালার মত’ - বক্তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।


এক নজরে ভারতচন্দ্র রায়


1. অষ্টাদশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর ।
2. মঙ্গলকাব্য ধারার শেষ কবি তিনি ।
3. ভারতচন্দ্র রায় বাংলা সাহিত্যের প্রথম নাগরিক কবি / মধ্যযুগের শেষ কবি ।
4. ভারতচন্দ্র বৈষ্ণব বেশ ধারনের জন্য ‘মুণিগোঁসাই’নামে পরিচিত ।
5. পাশ্চাত্যের কবি টমাস হার্ডির সাথে ভারতচন্দ্রকে তুলনা করা হয় ।
6. ভারতচন্দ্রের প্রথম জীবনী রচয়িতা কবি ঈশ্বর গুপ্ত ।
7. ভারতচন্দ্র মধ্যযুগীয় ধ্যানধারনায় আবিষ্ট হলেও মানবতাবাদ ও মানব - মানবীর রোমান্টিক প্রনয় সম্পর্ককে তাঁর কাব্যে তুলে ধরায়, তাকে যুগসন্ধিক্ষনের কবি বলা হয় ।
8. ভারতচন্দ্রের প্রথম রচনা ‘সত্যপীরের পাঁচালী’ ।
9. ‘সত্যপীরের পাঁচালী’ দুটি খন্ডে রচিত ।
10. ‘সত্যপীরের পাঁচালী’ রামচন্দ্র মুন্সি ও তাঁর পুত্র হীরারাম মুন্সির নিদের্শে রচিত ।
11. ভারতচন্দ্রের লেখা অসমাপ্ত নাটক ‘চন্ডীনাটক’ ।
12. ভারতচন্দ্রের মিশ্র ভাষায় রচিত গ্রন্থ ‘নাগাষ্টক’ ।
13. ভারতচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নাম ‘অন্নদামঙ্গল’ ।
14. ‘অন্নদামঙ্গল কাব্য’ রচনার জন্য রাজা কৃষ্ণচন্দ্র স্বপ্নাদেশ পান ।
15. ভারতচন্দ্র রায় ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে ‘অন্নদামঙ্গল কাব্য’ রচনা করেন ।
16. ‘অন্নদামঙ্গল কাব্যের দ্বিতীয় খন্ডের উৎস কাশ্মিরী কবি বিহ্লনের পঞ্চাশটি শ্লোকে রচিত ‘চৌরপঞ্চাশিকা’কাব্য ।
17. গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য ১৮১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম বাংলা সচিত্র পুস্তক রূপে ‘অন্নদামঙ্গল কাব্য প্রথম মুদ্রিত করেন ।
18. ভারতচন্দ্র তাঁর কাব্যকে ‘নূতন মঙ্গল’ বলেছেন ।
19. ‘অন্নদামঙ্গল কাব্যে’র পালার সংখ্যা আটটি (৮টি) ।
20.‘অন্নদামঙ্গল কাব্যে’র প্রধান চরিত্র - শিব, অন্নপূর্না এবং ঈশ্বরী পাটনী ।
21. ‘অন্নদামঙ্গল কাব্যে’র ঐতিহাসিক চরিত্র - মানসিংহ, কৃষ্ণচন্দ্র, জাহাঙ্গীর, অলিবর্দী খান প্রমুখ ।
22. ‘অন্নদামঙ্গল কাব্যে’ প্রাধান্য পেয়েছে - আদিরস ও হাস্যরস।
23. অন্নদামঙ্গল কাব্যে’র প্রথম গায়েন -- নীলমণি সমাদ্দার ।
24. আশুতোষ ভট্টাচার্য অন্নদামঙ্গল কাব্য প্রসঙ্গে বলেছেন --
‘মুকুন্দরামের চন্ডীমঙ্গলের কাহিনীর অনুকরণেই অন্নদামঙ্গলের প্রথম খন্ড রচিত হইয়াছে’ ।

No comments